বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায়

বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায় জানুন। ছাত্র অবস্থায় অনেক সময় টাকার অনেক প্রয়োজন হয় তবে সর্বদা বাবা-মায়ের কাছ থেকে টাকা চাওয়া সম্ভব হয় না বা পাওয়া যায় না। তাই ছাত্র অবস্থায় হালকা কিছু করে টাকা ইনকাম করা গেলে অনেক বেশি ভালো হয়।

বাংলাদেশে-ছাত্র-অবস্থায়-টাকা-ইনকামের-উপায়
করার মত অনেক কাজ থাকলেও ছাত্র অবস্থায় যেকোনো কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এক্ষেত্রে পার্ট টাইম অনলাইনে কাজ করে বা ছোট কোন প্রকার কাজ করে টাকা ইনকাম করা গেলে তা ছাত্রদের জন্য অনেকটা উপকারী হয়। তাই বাংলাদেশের ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায় জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ুন।

পেজ সূচিপত্রঃ বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায়

অনলাইনে কাজ করে যে সব সুবিধা পাওয়া যাবে

পার্ট টাইম অনলাইনে কাজ করে যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে। পার্ট টাইম অনলাইনে কাজ করতে হলে বা কাজ শুরু করলে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। অনলাইন কাজে নিজের ইচ্ছে মত যে কোন সময় কাজ করা যায় যা অফলাইনে করা যায় না। 
আবার অনলাইন কাজের ক্ষেত্রে এখানে ওখানে ছুটে বেড়াতে হয় না, এখানে নিজের প্রয়োজন মত যে কোন কাজ করা যায়। অনলাইনে কাজের জন্য কারো কথা মত চলতে হয় না বা আদেশ দেওয়ার মত কেউ থাকেনা। ঘরে বসে কাজ করতে হয় বলে এই কাজে কোন প্রকার ঝুঁকি নেই এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ একটি স্থান।
অনলাইন পার্ট টাইম কাজের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আপনি নিজের গতিতে কাজ করতে পারেন। তবে কিছু কাজ করার ক্ষেত্রে সময় উল্লেখ থাকে। অনলাইনে কাজ করার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ভিন্ন মানুষের সাথে কাজ করতে পারবেন। 
এছাড়াও পার্ট টাইম অনলাইনে কাজ করার মাধ্যমে ব্যক্তিগত জীবন ও নিজের পেশাগত জীবন একসাথে কাটাতে পারবেন। এর মাধ্যমে নিজ পরিবারের সাথে সময় কাটানোর পাশাপাশি অর্থ উপার্জন করা যায়। তাই পার্টটাইম অনলাইনে কাজ করে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া সম্ভব।

অনলাইন কাজের ক্ষেত্রে যেসব দক্ষতা থাকা দরকার

অনলাইনে কাজের ক্ষেত্রে কিছু দক্ষতা থাকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে কিছু প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকা দরকার যেগুলো হতে পারে বেশি কম্পিউটার স্কিল, ইন্টারনেট ব্যবহারের স্কিল বা বিভিন্ন প্রকার টুলস ব্যবহারের স্কিল। 

দলবদ্ধ ভাবে কাজ করার জন্য বা টিমের সঙ্গে কাজ করার জন্য কাজের সমন্বয় এবং সহযোগিতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাই প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এর স্কিল অনেক বেশি দরকার। আবার গ্রাফিক্স ডিজাইন এর স্কিল থাকা ভালো বা এগুলো সম্পর্কে বেসিক ধারণা থাকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ যেমন: HTML, CSS, বা অন্যান্য ওয়েব ডিজাইন প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা থাকা। 

আপনার যদি লেখালেখির ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে ব্লগ বা আর্টিকেল লিখে ও উপার্জন করা যেতে পারে। অনলাইন কাজের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের সাথে ভালো আচরণ করা যা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে সময় মত কাজ জমা দেয়া সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং পেশাগত যোগাযোগ বজায় রাখা। বর্তমানে ফ্রিতে অনেক ধরনের কাজ বা স্কিল শেখা যায়। 

তাই নিজের কাজের জন্য বা দ্রুত সফলতার জন্য নিজের স্কিল আরো বাড়াতে হবে। এসব দক্ষতা থাকলে আপনার অনলাইন কাজের ক্ষেত্রে অনেকটা প্রভাব পড়বে। যা আপনাকে আরো সফল করতে সাহায্য করবে তবে প্রত্যেক কাজের জন্য আলাদা আলাদা দক্ষতা প্রয়োজন হয়। তাই আপনি নিজের পছন্দমত যেকোনো কাজের দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।

ছাত্র অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ইনকাম

ছাত্র অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ইনকাম।বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায় একটি হলো ফ্রিল্যান্সিং। সাধারণত প্লাটফর্ম ফ্রিল্যান্সিং ছাত্রদের জন্যই বানানো হয়েছে। তবে সকল ছাত্র বা অনেকেই এর প্রতি খুব বেশি মনোযোগ দেই না বা এটি নিয়ে ভাবেনা। 

তাই আপনি যদি সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে পারেন বা ভাল কাজের মান বজায় রাখেন তাহলে ছাত্র অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং করে উপার্জন করতে পারবেন। ছাত্র অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং করলে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের পকেট খরচ চালাতে পারবেন। 

বাংলাদেশে-ছাত্র-অবস্থায়-টাকা-ইনকামের-উপায়

এছাড়াও বিভিন্ন প্রজেক্ট এর মাধ্যমে বা কাজের মাধ্যমে আপনি অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন যা পরবর্তীতে বিভিন্ন চাকরির জন্য অনেক বেশি উপকারী হতে পারে। 

আবার ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সাথে কাজ করতে হয় বা কাজ করার সুযোগ থাকে এতে আপনার যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি হবে। সকলেরই সময় ব্যবস্থাপনা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্র অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলে যাতে আপনি পিছিয়ে না পড়েন তার জন্য সঠিক সময় নির্ধারণ করতে হবে। 

ফ্রিল্যান্সিং এর প্রথম অবস্থায় ছোট কাজ দিয়ে শুরু করুন এটি অভিজ্ঞতা বাড়াতে অনেক বেশি সাহায্য করবে। বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আয় করছে। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে যেমন দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন হয় তেমনি একটা ভালো উপার্জনের সুযোগ হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো মাথায় রাখলে কিভাবে বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকাম করবেন তা বুঝতে পারবেন।

আরো পড়ুন: বিনিয়োগ ছাড়া অনলাইনে আয় করার উপায়

অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসা করে ইনকাম

অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসা করে ইনকামের জন্য প্রথমে নিজের নিজ নির্বাচন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বা আপনি কোন ধরনের জিনিস পছন্দ করেন বা কোন ধরনের পণ্য বিক্রি করতে চান তা নিশ্চিত করতে হবে। 

যেমন: ফ্যাশন বা লাইফ স্টাইল, ইলেকট্রনিক, বিভিন্ন অর্গানিক পণ্য বা কাস্টমাইজ পণ্য, ফিটনেস বা হেলথ সম্পর্কিত পণ্য বাজার এর চাহিদা অনুযায়ী বেছে নিবেন। এরপর ব্যবসার জন্য সঠিক প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। নিজে কিছু জনপ্রিয় প্লাটফর্ম নিয়ে আলোচনা করা হলো:

  1. shopify: যদি আপনি পেশাদার একটি ই-কমার্স স্টোর তৈরি করতে চান তাহলে এটি একটি ভালো বা পছন্দনীয় প্ল্যাটফর্ম। এছাড়াও এটি ব্যবহার করা সহজ এবং অনেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়।
  2. facebook: এটি অনেক জনপ্রিয় হাওয়াই আপনি এখানে অনলাইন স্টোর খুলতে পারবেন। এখানে খুব সহজেই যেকোনো পণ্য বুস্টিং এর মাধ্যমে প্রমোট করা যায় এবং সরাসরি ক্রেতার সাথে যোগাযোগ করা যায়।
  3. Daraz: বাংলাদেশের অনেক ভালো একটি ই-কমার্স প্লাটফর্ম হলো Daraz. তাই আপনি চাইলে এখানে নিজের শপ বা স্টোর খুলতে পারেন।
  4. Wordpress: এটি একটি ওপেন সোর্স বা প্লাটফর্ম। আপনি যদি ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে পারেন তাহলে এটি আপনার জন্য অনেক ভালো একটি অপশন হতে পারে।

পার্ট টাইম কাজ করে ইনকাম

পার্ট টাইম কাজ করে ইনকাম বিভিন্নভাবে করা যায়।বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায় হিসেবে অনেকে পার্ট টাইম কাজ করে থাকে। পার্ট টাইম কাজ করে ইনকামের জন্য  নিচে কয়েকটি ভালো বা জনপ্রিয় উপায় তুলে ধরা হলো:
  1. কনটেন্ট ক্রিয়েশন: Facebook বা Youtube এর মতো প্লাটফর্মে কনটেন্ট বা ভিডিও বানিয়ে আয় করা যায় আবার এসব প্লাটফর্মে স্পন্সরশিপের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।
  2. ডেলিভারি সার্ভিস: আপনার অবসর সময়ে আপনি চাইলে খাবার ডেলিভারির মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এই কাজের জন্য বিভিন্ন মানুষের করা অর্ডার বা পার্সেল তাদের দেওয়া ঠিকানায় পৌঁছে দিতে হয়। Food panda এর মত কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আপনি পার্ট টাইম কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন।
  3. টিউশন: ছাত্র অবস্থায় আপনি আপনার চেয়ে নিচু ক্লাসের শিক্ষার্থীদেরকে টিউশন দেওয়ার মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এর জন্য আপনার আশেপাশে বা পরিচিত শিক্ষার্থীদের পড়ানোর মাধ্যমে এটি শুরু করতে পারেন।
  4. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: এফিলিয়েট মার্কেটিং হল কোন পণ্য বা সেবা প্রচারের মাধ্যমে কমিশন নেওয়া। Amazon Affiliate বা Facebook এর মত প্লাটফর্ম এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য অনেক জনপ্রিয়।

কাজের জন্য অন্যতম কিছু প্ল্যাটফর্ম

বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায় হিসেবে রয়েছে অন্যতম কিছু প্ল্যাটফর্ম । এগুলো হলো Fiver, Upwork, Freelancer, Youtube, Facebook. উক্ত প্ল্যাটফর্ম গুলোতে নিশ্চিন্তে কাজ শুরু করতে পারেন। নিচে প্লাটফর্ম গুলোর কাজ নিয়ে আলোচনা করা হলো:
  • Fiver/ Upwork/ Freelancer :সাধারণত এগুলো হলো এক ধরনের মার্কেটপ্লেস এখানে আপনি যেকোনো ধরনের সার্ভিস সেলকরার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। এই মার্কেটপ্লেস গুলোতে সকল প্রকার স্কিল নিয়ে কাজ করতে পারেন।
  • Youtube: এর মাধ্যমে পছন্দমত বিভিন্ন প্রকার কনটেন্ট আপলোড করে ভিউ এবং মনিটাইজেশন এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
  • Facebook: সোশ্যাল মিডিয়া বা বিভিন্ন ধরনের মার্কেটিং বা প্রমোশন এর জন্য ফেসবুক অনেক বেশি জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম। এসব মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনেক বায়ার পাওয়া যায় যারা সরাসরি আপনার সাথে কাজের জন্য কথা বলতে পারবে।

পাঠ্য বইয়ের নোট তৈরি ও বিক্রি করা

বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায় হিসেবে পাঠ্য বই থেকে নোট তৈরি করে তা বিক্রি করে ইনকাম করা যেতে পারে। এর জন্য পাঠ্য বই থেকে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর হ্যান্ডনোট তৈরি করতে হবে। এরপর সেই নোটের হিসাব অনুযায়ী তা বিক্রি করে টাকা ইনকাম করা যায়। এই পদ্ধতিতে নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি আই করা যায়।

কেন শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরি পাওয়া কঠিন

শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরি পাওয়ার তুলনামূলকভাবে কঠিন হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। নিজের সে কারণগুলো আলোচনা করা হলো:

  • অভিজ্ঞতার অভাব: শিক্ষার্থীদের অনেকেরই কর্মক্ষেত্রে কাজ করার তেমন কোন অভিজ্ঞতা থাকে না। তাই সবাই অভিজ্ঞ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেন, যা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতা কঠিন করে দেই।
  • দক্ষতার ঘাটতি: বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর তত্ত্বগত বা বইয়ের জ্ঞান থাকলেও প্রারকিক দক্ষতার তেমন জ্ঞান থাকেনা। যেমন: বিভিন্ন সময় মানুষের সাথে যোগাযোগ, বিভিন্ন সমস্যার সমাধান বা সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা কম থাকে।
  • পরিকল্পনার ঘাটতি: অনেক শিক্ষার্থী জানে না কিভাবে সঠিক ভাবে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। শিক্ষার্থীরা যদি দক্ষতা ও উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেন বা পার্ট টাইম কাজের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তাহলে চাকরি পাওয়া সম্ভব না অনেকটাই বেড়ে যায়।

শেষ কথা-বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায়

বাংলাদেশে ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকামের উপায় জানতে আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। সঠিক দক্ষতা এবং সময় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই কাজগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক স্বাধীনতা আনতে পারে। 

আবার ছাত্র অবস্থায় টাকা ইনকাম শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সুবিধা নয় বরং এটি দ্বারা অভিজ্ঞতা অর্জন করাও সম্ভব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লং টেক বিডি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url