লোকাল টুরিস্ট হয়ে ওঠার সেরা ১৫ টিপস
লোকাল টুরিস্ট অর্থাৎ নিজ শহর বা এলাকায় একজন পর্যটকের মত ভ্রমণ করে বেড়ানো কে বোঝায়। এটি যেমন আপনার অর্থ বাঁচাতে সাহায্য করবে তেমনি আপনার অভিজ্ঞতা বাড়াতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
পেজ সূচিপত্রঃ লোকাল টুরিস্ট হওয়ার সেরা ১৫ টিপস
-
নিজ শহর সম্পর্কে জানা বা গবেষণা করুন
-
ক্যামেরা সাথে রাখার চেষ্টা করুন
- বন্ধুদের সাথে বা আত্মীয়দের সঙ্গে ঘুরুন
- স্থানীয় মানুষ বা সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠুন
- স্থানীয় কোন উৎসব বা পার্কে ঘুরুন
-
স্থানীয় বিভিন্ন খাবার উপভোগ করুন
-
নিজের শহরে থাকা অজানা স্থান খোঁজার চেষ্টা
-
বাইরে ট্রিপের পরিকল্পনা করা
-
আপনার অভিজ্ঞতা নোট করুন
-
ট্যুরে যাওয়ার আগে যা যা কাছে রাখবেন
-
নিজে নিজে কোন কিছু করার চ্যালেঞ্জ নিন
-
প্রত্যেক ঋতুতে ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিন
- যেভাবে অর্থের সাশ্রয় ও সময় বাঁচাতে পারবেন
- টুরিস্ট হাওয়ার কিছু উপকারিতা
- শেষ কথা- লোকাল টুরিস্ট হয়ে ওঠার সেরা ১৫ টিপস
নিজ শহর সম্পর্কে জানা বা গবেষণা করুন
ক্যামেরা সাথে রাখার চেষ্টা করুন
লোকাল ভ্রমণের সময় একটি ক্যামেরা সাথে রাখার চেষ্টা করুন। লোকাল ট্যুর দেওয়ার সময় এমন অনেক দৃশ্য দেখতে পাবেন যা পরবর্তীতে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অনেক সময় ছোট জিনিস যেমন সকালে সূর্য ওঠা কিংবা সূর্যের অস্ত যাওয়া এছাড়াও হতে পারে বিভিন্ন পশু পাখির সুন্দর মুহূর্ত বা প্রাকৃতিক দৃশ্য বা হতে পারে কোন রাস্তার একটি সুন্দর দৃশ্য।
এছাড়াও চোখে পড়ার মতো অনেক জিনিস যেমন প্রাচীন কোন ভবনে আঁকা কারুকার্য বা নদী
প্রবাহের একটি সুন্দর মুহূর্ত ইত্যাদি। এ সকল ধরনের সুন্দর মুহূর্তগুলো আপনার
ভ্রমণকে অনেক বেশি সুন্দর এবং স্মরণীয় করে তুলতে পারে। তাই ক্যামেরার মাধ্যমে
সকল মুহূর্তে ছবি তোলার চেষ্টা করুন বা ছোটখাটো ভিডিও রেকর্ড করুন।
বন্ধুদের সাথে বা আত্মীয়দের সঙ্গে ঘুরুন
কিছু কিছু সময় বন্ধুদের সাথে বা আত্মীয়দের সঙ্গে ঘুরার চেষ্টা করুন। একাই ভ্রমণ করে বা ট্যুর দিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব তবে কিছু কিছু সময় বন্ধুদের বা আত্মীয়স্বজনদের সাথে নিয়ে ঘুরাঘুরি করা অনেক বেশি আনন্দের হয়ে ওঠে।
সকলে মিলে একসঙ্গে কাটানো সময় এবং নতুন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা অনেক বেশি মজার হয়ে উঠতে পারে। সকলে মিলে ঘুরার সময় একসাথে দলবদ্ধ ভাবে ছবি তুলুন যা পরবর্তীতে স্মৃতি হয়ে থাকবে। এছাড়াও ট্যুরের জন্য নিজেদের মধ্যে ছোট দল গড়ে তুলতে পারেন।
স্থানীয় মানুষ বা সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠুন
স্থানীয়দের সাথে সর্বদা ভালো ব্যবহার বা শ্রদ্ধাশীল হন। স্থানীয়দের সাথে ভালো ভালো বা দায়িত্বশীল আচরণ তাদের সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তারাও আপনাকে অনেক গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করবে। এছাড়াও আপনার দায়িত্বশীল আচরণের জন্য তারা ভ্রমণকারীদের ভালো চোখে বা ইতিবাচক মনে করবে এবং এ সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে।
তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক হয়ে উঠলে তাদের ঐতিহ্য বা সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে আপনার অনেক সাহায্য হবে। যথা সম্ভব তাদের কোন নিয়ম-কানুন থাকলে তা অনুসরণ করে চলবেন। তাদের সাথে স্থানীয় ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করবেন।
স্থানীয় কোন উৎসব বা পার্কে ঘুরুন
নিজ শহরে স্থানীয় কোন উৎসব বা পার্কে অংশগ্রহণের চেষ্টা করুন। উৎসবের ক্ষেত্রে প্রথমে আপনার এলাকার সেই উৎসব কখন হতে চলেছে তার তথ্য সংগ্রহ করুন। এরপর সেখানে যে বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা নেওয়ার চেষ্টা করুন। অনেক উৎসবে বিভিন্ন ধরনের নতুন জিনিসের দেখা মেলে যা আপনার অভিজ্ঞতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
স্থানীয় পার্কে অনেক সময় শিক্ষণীয় জিনিস দেখা পাওয়া যায়। এছাড়াও অনেক সময় বিভিন্ন পশু-পাখি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এ সকল ধারণা আপনার মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করবে।
স্থানীয় বিভিন্ন খাবার উপভোগ করুন
স্থানীয় বিভিন্ন খাবার উপভোগ করা টুরিস্টের অন্যতম একটি দিক। স্থানীয় খাবার উপভোগের মাধ্যমে সেই অঞ্চল বা গ্রামের খাবারের স্বাদ বা তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিচয় পাবেন। এছাড়াও এর মাধ্যমে আপনি তাদের জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারবেন। টুরিস্ট এর মানে শুধুমাত্র পেট ভরে খাবার খাওয়া নয়।
তাই বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া চেষ্টা করুন এবং তা নিজের অভিজ্ঞতা বাড়ানোর চেষ্টা করুন। স্থানীয় খাবার খাওয়ার সময় সেই খাবারের সম্পর্কে বা সেই খাবারের সাথে জড়িত গল্প সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। সেই এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন ধরনের স্ট্রিট ফুড খেয়ে দেখতে পারেন।
স্ট্রিট ফুড খাবার মাধ্যমে আপনি স্দবা পাবেন। তবে খাবার খাওয়ার পূর্বে খাবারের
মান অবশ্যই যাচাই করার চেষ্টা করবেন বা সেই খাবার তাজা কি না তা জেনে নিন। সর্বদা
ভালো খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
নিজের শহরে থাকা অজানা স্থান খোঁজার চেষ্টা
নিজের শহরে থাকা অজানা স্থান খোঁজার চেষ্টা করুন। অনেক সময় আমরা নিজের শহরে বসবাস করি বলে ধারণা করি। এখানে জানার মত কোন অজানাই স্থান নেই। কিন্তু অনেক সময় আমাদের নিজ শহরে বা বসবাসের স্থানে এমন অনেক অজানা স্থান থেকে যায় যা আমরা বুঝতে পারি না।
এক্ষেত্রে এ সকল অজানা স্থান ভ্রমণটাকে একটি নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করতে পারে। নিজ
শহরে অজানা স্থান খোঁজার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন স্থানীয়
বিভিন্ন নিউজ বা খবর দেখা। এছাড়াও গুগল ম্যাপে নিজ শহর ঘুরে দেখা বা শহরের
স্থানীয় জনগণের মাধ্যমে অজানা স্থান সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা।
বাইরে ট্রিপের পরিকল্পনা করা
আপনার অভিজ্ঞতা নোট করুন
আপনার সকল অভিজ্ঞতা গুলো নোট করার চেষ্টা করুন। এই নোট করা অভিজ্ঞতা গুলো যেমন আপনার স্মৃতি হয়ে থাকবে তেমনি পরবর্তীতে এগুলো থেকে অনেক শিক্ষা নিতে পারবেন। আপনার ভ্রমণ করা সময়গুলো সর্বদা মনে রাখা সম্ভব হবে না সময়ের সাথে আপনি এগুলো ভুলতে থাকবেন।
তাই এই অভিজ্ঞতা গুলো এবং স্মৃতিগুলো জীবন্ত করে রাখতে নোট করে রাখুন। নোট করে রাখলে পরবর্তীতে নিয়ে গুলো দেখতে পারবেন আবার এর সম্পর্কে অন্যজনকেও অনেক ধরনের অভিজ্ঞতার তথ্য দিতে পারবেন। আপনার দৈনন্দিন নোট হিসেবে যে ধরনের অভিজ্ঞতাগুলো নোট করবেন তা হলো: কোন জায়গায় গিয়েছিলেন, কোন ঘটনাগুলো আপনার অনেক ভালো লেগেছিল, আপনি কোথায় কি দেখেছিলেন বা অন্যান্য অভিজ্ঞতা।
নোট করার পাশাপাশি যথাসম্ভব ছবি তুলে বা ভিডিও করার মাধ্যমে সেগুলো রেখে দিবেন। চাইলে আপনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো লিখে রাখতে পারেন। যা আপনার পরবর্তীতে কাজে লাগতে পারে এই ক্ষেত্রে আপনি কোন হোটেলে গিয়েছিলেন, কোথায় বা কোন জায়গার খাবার আপনার ভালো লেগেছে। আপনার এ সকল অভিজ্ঞতা গুলো নোট করার মাধ্যমে আপনার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি সময় বা জীবনের একটি অমূল্য অভিজ্ঞতা ধরে রাখতে পারবেন।
ট্যুরে যাওয়ার আগে যা যা কাছে রাখবেন
আপনার ট্যুর বা ভ্রমণকে সহজ এবং সফল করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস সাথে রাখা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যা আপনার অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি সামলাতে সাহায্য করবে। এর জন্য প্রথমে আপনার প্রয়োজনীয় জামাকাপড় সাথে রাখবেন, একটি ক্যামেরা রাখার চেষ্টা করবেন যাতে সুন্দর মুহূর্ত ক্যাপচার করতে পারেন।
এছাড়া আপনার ভ্রমণের সময় অনুযায়ী হালকা বা গরম কাপড় সাথে রাখুন। বের হওয়ার আগে সাথে হালকা খাবার এবং পানি রাখুন। সর্বদা চেষ্টা করবেন আপনার ভ্রমণের প্রকৃতি এবং উদ্দেশ্য হিসেবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেছে নেওয়া। আপনার যদি সকল ধরনের প্রস্তুতি থাকে তাহলে ভ্রমণকালীন সময়ে কোন ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে না এবং আপনি আপনার ভ্রমণ সফলভাবে করতে পারবেন।
নিজে নিজে কোন কিছু করার চ্যালেঞ্জ নিন
ভ্রমণের সময় নিজে নিজে কোন কিছু করার চ্যালেঞ্জ নিলে আপনার দক্ষতা যেমন বাড়বে তেমনি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে যাবে। এছাড়াও আপনার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের জন্য আপনার মধ্যে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।
যে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ আপনাকে নতুন কিছু শিখতে উদ্বুদ্ধ করে। চ্যালেঞ্জ করার মাধ্যমে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পাবে এতে আপনি যেকোনো সমস্যার সমাধান খুব সহজে বের করতে পারবেন। চ্যালেঞ্জ নেওয়ার পর তা কোন ভাবেই ছেড়ে দেয়ার মনোভাব তৈরি করবেন না এতে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস কমে যায়।
আপনার ভ্রমণে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে পারেন আপনি কতটুকু হাঁটবেন বা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাহাড়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি।
প্রত্যেক ঋতুতে ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিন
প্রত্যেক ঋতুতে ভিন্ন অভিজ্ঞতা নেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রতিটি ঋতু আমাদের মাঝে
ভিন্ন আবহাওয়া এবং ভিন্ন পরিবেশ নিয়ে হাজির হয়। এ ক্ষেত্রে আমরা ছয়টি ঋতুতে
ছয় ধরনের অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারি। নিচে সকল ঋতু অনুযায়ী ভিন্ন অভিজ্ঞতা
পাওয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
- গ্রীষ্মকাল: গ্রীষ্মকালের আবহাওয়া অনেক গরম হয়ে থাকে। তাই এই অনুযায়ী অভিজ্ঞতার জন্য সমুদ্রে ভ্রমণ করতে পারেন। সমুদ্র সৈকতে সাঁতার কাটা, খেলাধুলা করা বা সূর্যাস্ত উপভোগ করুন।
- বর্ষাকাল: বর্ষাকালে সাধারণত অনেক বেশি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। তাই এই ঋতুতে অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য আপনাকে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে। বর্ষাকালে প্রকৃতিকে এক নতুন রূপে দেখা যায়।
- শরৎকাল: শরৎকালে বিভিন্ন উৎসবের আমেজ বা প্রকৃতির স্নিগ্ধতা দেখা যায়। এই সময় আকাশ নীল বর্ণের দেখায় এবং প্রকৃতি এক ভিন্ন রূপ ধারণ করে। এই সময় বাইরে ঘুরে বেড়াতে পারেন।
- হেমন্তকাল: হেমন্তকাল শরৎ এবং শীতকালের মাঝামাঝি একটি ঋতু হওয়ায় এই ঋতুতে শীতের হালকা আবহাওয়া পাওয়া যায়। এই সময় গ্রামের দিকে সোনালী ধান কাটার দৃশ্য দেখা যায়। এ ঋতুতে শিউলি ফুল ফোটে যা দেখতে অনেক বেশি সুন্দর লাগে। এছাড়াও হেমন্তকালে নবান্ন উৎসব পালন করা হয়।
- শীতকাল: শীতকালের আবহাওয়া সাধারণত প্রচন্ড ঠান্ডা এবং শুষ্ক হয়ে থাকে। এই সময় উষ্ণ বা গরম কাপড় পড়ে কুয়াশার মাঝে ঘুরতে অনেক বেশি ভালো লাগে। এছাড়াও এই সময় বানানো হয় বিভিন্ন ধরনের পিঠা এবং শীতকালীন সব খাবার।
- বসন্তকাল: বসন্তকালে প্রকৃতি রঙিন রূপে জেগে ওঠে। চারদিকে দেখা যায় বিভিন্ন জাতের ফুল এবং গাছে গাছে পাখিদের কিছিরমিচির ডাক। এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশ বা ঋতু ঘোরাঘুরির জন্য অনেক ভালো একটি সময় বলা যায়।
যেভাবে অর্থের সাশ্রয় ও সময় বাঁচাতে পারবেন
লোকাল টুরিস্ট হাওয়ার কিছু উপকারিতা
টুরিস্ট হওয়ার অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। টুরিস্ট হওয়া অর্থাৎ
নিজের বা আশেপাশের শহরকে নতুনভাবে উপস্থাপন করা এবং ভিন্নভাবে দেখা। এর মাধ্যমে
আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন এবং নতুন ধরনের জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। এর মাধ্যমে
আপনি স্থানীয় সকল সম্প্রদায় এবং নিজেকে নতুন ভাবে জানতে পারবেন। এতে আপনি
স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে গভীরভাবে যুক্ত হতে পারবেন।
লং টেক বিডি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url